দৃষ্টিহীন প্রতিভাবান সঙ্গীত শিল্পীকে জন্মদিনের খরচের টাকা থেকে হারমোনিয়াম উপহার

28th December 2020 9:21 am বর্ধমান
দৃষ্টিহীন প্রতিভাবান সঙ্গীত শিল্পীকে জন্মদিনের খরচের টাকা থেকে হারমোনিয়াম উপহার


নিজস্ব সংবাদদাতা ( বর্ধমান ) :  অর্থ অভাবে আজও কোন প্রতিভাবানের প্রতিভা হারিয়ে যায়না। হারিয়ে যায়না তার মনে উঁকি দেওয়া শিখড়ের সিঁড়িতে পৌছানোর স্বপ্ন। মুছে যায়না গরীব অসহায় প্রতিভাবানের পরিবারের মানুষ গুলির অন্তরের ইচ্ছা। পূর্ব বর্ধমানের গুসকরার আলুটিয়ার গ্রামের ১৪ বছর বয়সী এক অসহায় অন্ধ প্রতিভাবান কিশোর মহম্মদ হায়দার আলি। গানে তার গলা বেশ সুমধুর। ইতিমধ্যেই এলাকায় সরগোল ফেলেছে তার কন্ঠ। তাকে সাহায্য করতে নিজের জন্মদিনে  একটি হারমোনিয়াম উপহার দিয়ে সাহায্য করলেন হাবড়া অশোকনগরের এক সমাজকর্মী রিয়া রুবি। পাশাপাশি পরিবারের সদস্যদের নতুন জামা কাপড় ও তিন মাসের খাদ্যসামগ্রী দিয়ে পাশে দাঁড়ালেন তার গলসি এলাকার আজিজুর রহমান ও লালন সেখ । আজিজুর পেশায় সংবাদ কর্মী ও লালন শেখ খুদ্র ব্যবসায়ী। এদিন ওই উপহার নিয়ে হায়দারের বাড়িতে আসেন আজিজুর রহমান ও লালন শেখ। জানা গেছে, হায়দার আলির বাবা শেখ আনসার আলি পেশায় রাজমিস্ত্রি ছিল। তবে শারিরীক সমস্যার জন্য আর কাজ করতে পারেন না। মা হাফিজা বেগম গৃহবধূ। তিন ভাই, তিন বোন। দুই দিদির বিয়ে হয়ে গিয়েছে। বাড়িতে রয়েছেন এক দিদি মোমিনা খাতুন। এক ভাইয়ের উপার্জনে চলে ওদের সংসার। অভাব যেন বাসা বেঁধেছে তাদের পরিবারে। পরিবারের আর্থিক অসচ্ছলতার কারনে থেমে গেছে, প্রতিভাবান কিশোরের সব স্বপ্ন। বাবা আনসার আলি জানান, জন্মের এক একমাস পরেই অজানা কোন রোগে হায়দারের দুটি চোখই ধীরে ধীরে নষ্ট হয়ে যায়। তারপর থেকেই দৃষ্টিহীন হয়ে পড়ে সে। ছোট থেকেই গান শুনতে ভালবাসতো হায়দার। আর গান শুনে শুনে সে গান গাইতো। কিন্তু টাকার অভাবে বাদ্যযন্ত্র কিনতে পারেনি তার পরিবার। তাছাড়া কোথাও তালিম নিতে পারেনি। তিনি বলেন, দু'তিনটে বড় রিয়ালিটি শোয়ে গানের অডিশন দিয়েছিল তার ছেলে। কিন্তু  তাকে পিছিয়ে আসতে হয়েছিল উপযুক্ত তালিমের অভাবে। তবে কিশোরের সঙ্গীত প্রতিভা এলাকার সবার কাছে প্রশংসা কুড়োয়। প্রতিভাবান কিশোর হায়দার আলি জানিয়েছে, তার বাবা অভাবে কারনে তাকে হারমোনিয়াম কিনে দিতে পারেনি। তাই সে সঙ্গীতের শিক্ষকের কাছে রেওয়াজ করার সুযোগ পাইনি। এর আগে অনেকেই কথা দিয়েছিলেন তাকে হারমোনিয়াম কিনে দেবেন। কিন্তু তারা কথা রাখেননি। তবে রিয়ারুবি, আজিজুর ও লালনের জন্য এবার তার প্রতিভায় আর কোন বাধা রইল না। দৃষ্টিহীন প্রতিভাবান কিশোরকে এমন সাহায্যর জন্য খুশি  কিশোরের পরিবার থেকে প্রতিবেশীরাও। চোখে দেখতে না পেলেও সুুরের আলোয় পথ চলুুক হায়দার ।





Others News

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : প্রায় এক বছর আগে আবেদন করেও মেয়ের জাতিগত শংসাপত্র মেলেনি । আবেদনকারীদের জাতি শংসাপত্র দেওয়ার
ক্ষেত্রে দেরি করা যাবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।কিন্তু বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটাই ঘটে চলেছে।প্রায় এক বছর আগে  চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে  আবেদন করেছিলেন মা।কিন্তু মেয়ে কে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসলেও জাতি  শংসাপত্র আজও না মেলায় কার্যত হতাশ হয়ে পড়েছেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির রাধাকান্তপুর নিবাসী ঊর্মিলা দাস।ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য ঊর্মিলাদেবী বৃহস্পতি বার মেমারি ১ ব্লক বিডিও অফিসে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন। শংসাপত্র পাবার জন্য বিডিও সাহেব কি ব্যবস্থা করেন সেদিকেই এখন তাকিয়ে ঊর্মিলাদেবী। 

বিডিওকে লিখিত আবেদনে ঊর্মিলাদেবী জানিয়েছেন ,তাঁর স্বামী মানিক দাস দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী ।বছর ১০ বয়সী তাঁদের একমাত্র কন্যা গ্রামের বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত কালে তাঁর ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য তিনি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারী আবেদন করেছিলেন।  উর্মিলাদেবী বলেন ,তার পর থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে  গেলেও তিনি তাঁর মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পান না।মেয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসায় গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে তিনি শংসাপত্রের বিষয়ে মেমারি ১ ব্লকের বিডিও অফিসে খোঁজ নিতে যান।জাতি শংসাপত্র বিষয়ের বায়িত্বে থাকা বিডিও অফিসের আধিকারিক তাঁকে অনলাইনে এই সংক্রান্ত একটি নথি বের করে আনতে বলেন । অনলাইনে সেই নথি বের করেনিয়ে তিনি ফের ওই আধিকারিকের কাছে যান । তা দেখার পর ওই আধিকারিক তাঁকে  ২০ দিন বাদে আসতে বলেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন , তিনি ২৫ দিন বাদে যাবার পর ওই আধিকারিক তাঁকে গোপগন্তার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে খোঁজ নেবার কথা বলেন । তিনি এরপর গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যান । নথি ঘেঁটে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে কোন ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি।ঊর্মিলাদেবী দাবী করেন ,এই ভাবে তিনি একবার বিডিও অফিস , আবার পঞ্চায়েত অফিসে দরবার করে চলেন । কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয় না। মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য  গত ১৩ ডিসেম্বর ফের তিনি বিডিও অফিসে যান ।ওই দিনও বিডিও অফিসের জাতি শংসাপত্র বিষয়ক বিভাগের আধিকারিক তাঁকে একই ভাবে পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যেতে বলে দায় সারেন। পরদিন তিনি পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে গেলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ফের জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে  ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি । কেন মেয়ের জাতি শংসাপত্র পাচ্ছেন না সেই বিষয়ে  না পঞ্চায়েত না ব্লক প্রশাসনের কর্তৃপক্ষ কেউই তাঁকে কিছু জানাতে পারেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন ,পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির আগে তার মেয়ে যাতে ওবিসি শংসাপত্র পেয়ে যায় তার ব্যবস্থা করার জন্য এদিন তিনি বিডিওর কাছে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন । মেমারী ১ ব্লকের বিডিও আলী মহম্মদ ওলি উল্লাহ এদিন বলেন ,“জাতি শংসাপত্র পাবার জন্য হাজার হাজার আবেদন জমা পড়ছে । তবে ঊর্মিলাদেবীর কন্যা দ্রুত যাতে বিবিসি শংসাপত্র দ্রুথ পান সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে “। মেমারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য্য বলেন,’মেমারি  বিধানসভা এলাকার আবেদনকারীরা দ্রুত যাতে জাতি শংসাপত্র পান সেই বিষয়ে প্রশাসনকে আরও তৎপর হওয়ার কথা বলবো’।